ফ্রী ফায়ার গেমের ক্ষতিকর দিক।
আজকের ব্লগে আমরা জানবো ফ্রী ফায়ার গেম খেললে কি ক্ষতি হয়, যাতে করে যে কেউ এই গেমের ব্যাপারে সতর্ক হতে পারে। এবং যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে নিজেকে সতর্ক রাখতে পারে তাহলে চলুন, শুরু করি।
ফ্রী ফায়ার একটি অনলাইন শুটিং গেম, যেটা সিঙ্গাপুর ভিত্তিক গ্যারেনা কোম্পানি দ্বারা পাবলিশ হয়েছে। এদের গেমিং ডিভিশন কোম্পানিটি হলো সি লিমিটেড।
এটি একটি ব্যাটেল রয়েল গেম। যার মানে দাঁড়ায়, এখানে একটি নির্দিষ্ট ব্যাটেল প্লেসে মাল্টিপল বা একাধিক প্লেয়ার অনলাইনে শুটিং করে টিকে থাকে। এবং যে কোনো একজনই কেবল শেষ অবধি টিকে থাকে।
ফ্রী ফায়ার গেমের কনসেপ্ট কি?
ফ্রী ফায়ার গেমে সার্ভাইব করা বা টিকে থাকার অর্থ হলো মোট ৫০ জন প্লেয়ার এর মধ্যে যে কোনো একজনের শেষ অবধি মারামারি করে টিকে থাকা। প্রতিটি ম্যাচ মূলত 10 মিনিটের মধ্যে শেষ হয়ে যায়।
অথবা তার চেয়ে সামান্য সময় বেশিও লাগতে পারে। এই গেমটির গেমপ্লে-এর মূল উদ্দেশ্য হলো সেইফ জোনে বেচে থাকা। সেইফ জোন বা নিরাপদ স্থান থেকে বাইরে চলে গেলে যে কেউ তার লাইফ বা এইচ-পি হারিয়ে ফেলবে।
এবং দ্রুত গেম থেকে নক আউট হয়ে যাবে। তো সবমিলিয়ে, গেমের মূল কনসেপ্ট অনেকটা এরকম।
বাচ্চাদের ফ্রী ফায়ার গেম খেললে কী কী ক্ষতি হয়?
অবশ্যই হয়, ফ্রী ফায়ার এর মধ্যে অবাধ্যকতা অনেক বেশি নজরে পড়ছে। ভায়োলেন্স টাইপের গেম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যারা অল্প বয়সী বা বাচ্চা, তাদের জন্য গেমটি উপযুক্ত না।গেমটিতে সকলই নিশ্চয়ই রক্তপাত গ্রাফিক ডিজাইন হিসেবে দেখেছে। যখন গুলি পড়ে অথবা কেউ মারা যেতে শুরু করে তখন তার রক্তপাত হয়, চিৎকার করে। এ সমস্ত বিষয়ে ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য অনুপযুক্ত ব্যাপার।
ফ্রী ফায়ার প্লেয়াররা চাইলে যে কোন অপরিচিত ব্যক্তির সাথে গ্লোবালি চ্যাট করতে পারে। অথবা গেমের শেষে অপরিচিত বন্ধুদের সাথেও চ্যাট করতে পারে।
গেমিং কমিউনিটিতে অনেকাংশেই ভায়োলেন্স মানুষ থাকে। অর্থাৎ অনলাইন বোলিং, হুমকি এসবেরও সম্ভাবনা থাকে।
অপরিচিত ভায়োলেন্ট কোন ব্যক্তির সাথে চ্যাটিংয়ে যেটা সবচেয়ে বেশি নজরে পরে, সেটা হচ্ছে গালিগালাজ এবং কুরুচিপূর্ণ-আশ্রাব্য অশালী কথাবার্তা।
অপরিচিত ভায়োলেন্ট কোন ব্যক্তির সাথে চ্যাটিংয়ে যেটা সবচেয়ে বেশি নজরে পরে, সেটা হচ্ছে গালিগালাজ এবং কুরুচিপূর্ণ-আশ্রাব্য অশালী কথাবার্তা।
ফ্রি ফায়ার যদিও কিছু অ্যাকাউন্ট টার্গেট করে। বিশেষ করে ভায়োলেন্ট একাউন্টগুলোকে ব্যান করে দেয় বা সাসপেন্ড করে। তারপরে এ গেমের মধ্যে হ্যাকার আছে। যারা চাইলে একেকজনের ব্যক্তিগত তথ্যাদি সংগ্রহ করতে পারে বা চুরি করতে পারে।
আর এমনিতে ফ্রী ফায়ার গেমটিতে So Called ও পরিচিত হ্যাকার, যারা গেমের বিভিন্ন কনসেপ্ট গুলোকে হ্যাকিং করে। তারা বিশেষ ক্ষমতা অর্জন করে, যার কারণে দেখা যায় গেমের মধ্যে তাদের সাথে কেউ টিকে থাকবে এটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।
তো, সব মিলিয়ে গেমটিতে বিশৃঙ্খলা তো অবশ্যই আছে।
এবার মূল কথায় আসি। ফ্রী ফায়ার গেমে তার ইউজারদের, গেমটি খেলে যারা, তাদেরকে বিভিন্ন গেমের কারেন্সি; বিশেষ করে ডায়মন্ড কিমতে অনেক বেশি উদ্বুদ্ধ করা হয়।
কারণ গেমের কারেন্সি কিনলে বন্দুকের স্ক্রিন, কালেকশন সহ আরো নানা সুবিধা অর্জন করা যাবে। সেগুলোকে সংগ্রহ করতে ডায়মন্ডের প্রয়োজন যার।
ফ্রী ফায়ার আমাদের আর্থিকভাবে কি কি ক্ষতি করে?
এই অ্যাপটিতে কোন কিছু ক্রয় করার প্রতি প্লেয়ারদের কে অনেক বেশি চাপ দেয়া হয়। অতিরিক্ত প্রেসার দেওয়া হয়, যাতে করে গেমে বেশি ডায়মন্ড ক্রয় করে। ফ্রী ফায়ার নিজের অ্যাপের মধ্যে ডায়মন্ড ক্রয় করার জন্য তিনটি স্টেপ অনুসরণ করে।১। লোভ দেখানোঃ ফ্রী ফায়ার খেললে গেম কি ক্ষতি হয়!
গেমটিতে প্রতি মাসের শেষে লোভনীয় ডিসকাউন্টের একটি পারসেজ বা ক্রয় করার শপ আসে, যেখানে মোটামুটি অনেক কালেকশন। থাকে এবং সেগুলোকে ৯০ ভাগ অবধি ডিসকাউন্টে নেয়া যায়।এমনকি এক ডায়মন্ড সর্বোচ্চ ডিসকাউন্টে ১ ডায়মন্ডেও আইটেম নেয়া যায়। এভাবে ইউজারদেরকে লোভ দেখায় ডায়মন্ড ক্রয় করার জন্য।
বেশিরভাগ শুরুর পর্যায়ে যারা থাকে, তাদেরকে এভাবে ডায়মন্ড ক্রয় করার জন্য লোভ দেখায়। যারা টপ না করার জন্য বাধ্য ছিল, তারা ডিসকাউন্ট পেয়ে চিন্তা করে টপ আপ করার জন্যে।
বেশিরভাগ শুরুর পর্যায়ে যারা থাকে, তাদেরকে এভাবে ডায়মন্ড ক্রয় করার জন্য লোভ দেখায়। যারা টপ না করার জন্য বাধ্য ছিল, তারা ডিসকাউন্ট পেয়ে চিন্তা করে টপ আপ করার জন্যে।
তারাও একটু একটু ডায়মন্ড টপ আপ করে কারেন্সি ক্রয় করার প্রথম ধাপ অনুসরণ করে। প্রথমবার ডায়মন্ড ক্রয় করার পরে বিভিন্ন কালেকশন গুলো কম মূল্যে পাওয়াতে, তাদের মধ্যে এক ধরনের সন্তুষ্টি কাজ করে।
কিন্তু পরবর্তীতে যখন ডিসকাউন্ট কম আসে (এটা গ্যারেনার ফন্দি) তখনও কিন্তু তারা টপ আপ করতে চায়। কারণ আলাদা এক ধরনের সন্তুষ্টি পায়। এর পর থেকে কখনোই তারা বেশি বেশি ডিসকাউন্ট পাবে না।
কিন্তু পরবর্তীতে যখন ডিসকাউন্ট কম আসে (এটা গ্যারেনার ফন্দি) তখনও কিন্তু তারা টপ আপ করতে চায়। কারণ আলাদা এক ধরনের সন্তুষ্টি পায়। এর পর থেকে কখনোই তারা বেশি বেশি ডিসকাউন্ট পাবে না।
এমনকি তাদের অন্যভাবে বিভিন্ন স্ট্যাপ অনুসরণ করিয়ে আরো বেশি ডায়মন্ড ক্রয় করানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করানো হয়।
পড়ুনঃ
যখন একজন ইউজার ডায়মন্ড ক্রয় করে, কোন একটি আইটেম কেনা সম্পন্ন করে নেয়, তারপরে আরো ইচ্ছা করে বেশি বেশি আইটেম নিতে।
যেহেতু তার জন্য আর ইভেন্ট অনুযায়ী বেশি ডিসকাউন্টও থাকে না, কাজেই তাকে আরো বেশি ডায়মন্ড টপ আপ করতে আরো বেশি টাকা খরচ করতে হয়।
একটা সময় ওই একই লোক যে কখনো ডায়মন্ড টপ আপ করেনি অথবা করতে চায়নি, সেও ডায়মন্ড ক্রয় করে বিভিন্ন কালেকশন সংগ্রহ করতে ইচ্ছুক হয়ে দাঁড়ায়।
২। বেশি বেশি প্রচার-প্রচারণা।
ফ্রী ফায়ারে যখন কোনো কালেকশন আসে, সেটা ব্যবহার করলে কি রকম দেখাবে? বিশেষ করে কোন একটা পোশাক পড়লে কি রকম লাগবে, অথবা গান স্কিনে কি কি সুবিধা আছে?সেগুলো কেউ ডায়মন্ড দিয়ে ক্রয় না করলে বুঝতে পারে না। যেমনঃ একটা বন্দুকের স্পেসিফিকেশননে যে সমস্ত গুন থাকে, সেগুলোর গেমের মধ্যে কিভাবে কাজ করে, সেটাও দেখার বিষয়। কিন্তু ফ্রি ফাউয়ার এ ব্যাপারে প্রচার প্রচারণা চালায়।
তারা দেখায় যে কোন একটি আইটেম ব্যবহার করলে ইউজারদেরকে কেমন লাগে? এতে করে ইউজাররা আকৃষ্ট হয়। আকর্ষণ অনুভব করে। এবং ডায়মন্ড টপ আপ করতে উদ্বুদ্ধ হয়।
তারা দেখায় যে কোন একটি আইটেম ব্যবহার করলে ইউজারদেরকে কেমন লাগে? এতে করে ইউজাররা আকৃষ্ট হয়। আকর্ষণ অনুভব করে। এবং ডায়মন্ড টপ আপ করতে উদ্বুদ্ধ হয়।
৩। কম মূল্যে বেশি ডায়মন্ড নেয়ার সুযোগ করে দেওয়া।
ফ্রী ফায়ার এ স্পেশাল এয়ারড্রপ, উইকলি মেম্বারশিপ অথবা লেভেল আপ মেম্বারশীপে, কম মূল্যে অধিক ডায়মন্ড টপ আপ করার সুযোগ দেয়।এতে করে কেউ স্বাভাবিকভাবে ডায়মন্ড টপ আপ না করলেও ঐ সমস্ত মেম্বারশিপ বা স্পেশাল এয়ার ড্রপ ক্রয় করার ইচ্ছা পোষণ করে। যাতে করে সকল পর্যায়ের মানুষ ডায়মন্ড নিতে শুরু করে।
৪। ডায়মন্ড ক্রয় করায় সহজলভ্যতাঃ
ফ্রী ফায়ার ডায়মন্ড টপ আপ করার জন্য কোডাশপ আছে। যেখানে বিকাশের মাধ্যমে ডায়মন্ড কেনা যায়। তাছাড়া বিভিন্ন লোকাল টপ আপ এর জায়গায়, এবং ফেসবুক পেজে সামান্য কম মূল্যেই একই প্যাক ক্রয় করা যায়।এতে করে প্লেয়ারদের গুগল প্লে ক্রেডিট বা কার্ড পেমেন্ট ডায়মন্ড নিতে হয় না। এবং ডায়মন্ড ক্রয় করাটাও সহজ হয়ে দাড়িয়েছে।
একটি গেমের কারেন্সি ক্রয় করার মত অহেতুক কাজ আর কিছুই নেই। সম্পূর্ণ অযৌক্তিক একটি কাজ। এ কারেন্সি ক্রয় করলে গেমের মধ্যে যতটুকু লাভ হয়, সেটা সবই ভার্চুয়ালি।
একটি গেমের কারেন্সি ক্রয় করার মত অহেতুক কাজ আর কিছুই নেই। সম্পূর্ণ অযৌক্তিক একটি কাজ। এ কারেন্সি ক্রয় করলে গেমের মধ্যে যতটুকু লাভ হয়, সেটা সবই ভার্চুয়ালি।
বাস্তব দুনিয়ায় আর কোন প্রভাব নেই। বরং টাকা ক্ষতি হয়। ফ্রি ফায়ার এর মত সকল গেমের এই দিকগুলোই সবচেয়ে বাজে।
২। ফ্রী ফায়ার গেমে যদি কেউ মনোযোগ দিয়ে খেলতে যায়, তবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্ভাবনা থাকে। দেখুন, যখন কেউ ফ্রি ফায়ার খেলে, তখন তার মনোযোগ গেম এর মধ্যে খুব বেশি থাকে।
ফ্রি ফায়ার গেমের অন্যান্য ক্ষতিকর ও হারাম দিকঃ
১। ফ্রী ফায়ারে অশালীন যৌনতা পূর্ণ চরিত্র আছে। বিশেষ করে পোশাক পরিচ্ছদে এমনটা প্রকাশ পায়।২। ফ্রী ফায়ার গেমে যদি কেউ মনোযোগ দিয়ে খেলতে যায়, তবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্ভাবনা থাকে। দেখুন, যখন কেউ ফ্রি ফায়ার খেলে, তখন তার মনোযোগ গেম এর মধ্যে খুব বেশি থাকে।
এতে করে অতিরিক্ত মনোযোগ দেওয়া সহ চোখের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ আমরা সাধারণত যেকোন কাজের মধ্যেই চোখের পলক কয়েকবার বা নির্দিষ্ট বার ফেলি।
কিন্তু ফ্রি ফায়ার খেলতে গেলে গেমারদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চোখের পলক না ফেলার উপক্রম থাকে, যা চোখের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। এতে করে কম বয়সে চশমা ব্যবহারের প্রয়োজন হতে পারে।
৩। ফেব্রুয়ারি ২০২১ এর তদন্ত অনুযায়ী, ৪ থেকে ১৫ বছর বয়সী ছেলেমেয়েরা ফ্রি ফায়ার খেলে। যেটা হুমকি স্বরূপ। ছোট ছেলেমেয়েদের এমন ব্যাটেল রয়েল গেম গুলো খেলা উচিত নয়।
৩। ফেব্রুয়ারি ২০২১ এর তদন্ত অনুযায়ী, ৪ থেকে ১৫ বছর বয়সী ছেলেমেয়েরা ফ্রি ফায়ার খেলে। যেটা হুমকি স্বরূপ। ছোট ছেলেমেয়েদের এমন ব্যাটেল রয়েল গেম গুলো খেলা উচিত নয়।
এর পরবর্তী বয়সে যারা খেলে তাদের ক্ষেত্রে এটা নিজস্ব হতে পারে, যার ফল তাকে নিজেই ভোগ করতে হবে। কিন্তু ছোট ছেলে মেয়েদের নিজস্ব সিদ্ধান্তে আসাটা তো অস্বাভাবিক ব্যাপার। কারণ তাদের ক্ষেত্রে অভিভাবকেরও নিজস্ব দায়িত্ব কর্তব্য ও মতামত থাকে।
পড়ুনঃ
ফেব্রুয়ারী ২০২১ এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ৪ থেকে ১৫ বছর বয়সে ছেলেমেয়েরা প্রতিদিন গড়ে দুই ঘন্টা ফ্রী ফায়ার খেলে। এখন হয়তো আরো বেড়েছে।
এর মানে, আপনি নিশ্চয় বুঝতে পারছেন যে এর মধ্যে কিছু শতাংশ পপুলেশন হয়তো আট ঘণ্টা অব্দিও ফ্রী ফায়ার খেলে। অর্থাৎ সম্পূর্ণ আসক্ত। এর কারণ যখন গড় হিসাব করা হয়, তখন সকল ইউজারদেরকে মাথায় নিয়ে হিসাব করা হয়।
তো অনেক ইউজারই আছে, যারা দিনে হয়তো এক দুইবার লগইন করে। অর্থাৎ গেমে ৫-১০ মিনিট পার করে।
ফ্রী ফায়ার গেমের মধ্যে অভিভাবকের নিয়ন্ত্রণ নেই। কাজে গেমটি খেলাটি নিরাপদ হবে কি?
নাহ, এ ব্যাপারে অভিভাবকের কিছু সতর্কতা অবলম্বন অনুসরণ করতে হবে।ফ্রী ফায়ার গেম খেললে কি ক্ষতি হয় তা তো বুঝলেনই।
বাচ্চা ছেলেমেয়েরা কেন ফ্রি ফায়ার খেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
ফ্রী ফায়ার ছোট ছেলেমেয়ে থেকে শুরু করে তরুণ তরুণী যুবক-যুবতিসহ সকল পর্যায়ের মানুষই খেলে থাকে। বিশেষ করে বাংলাদেশের বাইরে অন্য দেশের দিকে লক্ষ্য করলে এমনটাই দেখা যায়।বাচ্চাদের, তরুণদের ফ্রী ফায়ার খেলার কারণঃ
১। গেমটি সম্পূর্ণ ফ্রি। এবং ফ্রি গেমে খুব সুন্দর একটা কনসেপ্ট ব্যাটেল রয়েল গেম দারুন ভাবে উপভোগ করতে পারে।
২। এই গেমটি খেলা খুবই সহজ। একটি ছোটো বাচ্চাও এই গেম খেলতে পারবে। গেমটিতে দক্ষ হওয়াটাও প্রেক্টিস নির্ভর। যে যত বেশি সময় খেলবে, তার দক্ষতা-ও তত বেশি।
৩। এই গেমের মুভমেন্ট বা চলাফেরা অনেক ফাস্ট। যে কোন ফাস্ট গেম সকলের প্রিয় থাকে। কারণ এতে সময় ব্যয় হয় কম।
৪। এই গেমটি খুব কম র্যাম এর ফোনেও ব্যবহার করা যায়। গেমের জন্য সর্বনিম্ন র্যাম এর স্পেসিফিকেশন হলো 2gb র্যাম। অর্থাৎ লো বাজেটের ফোনেও এই গেমটি খেলা যাবে।
৫। তাছাড়া বন্ধু-বান্ধব সকলকে নিয়েই গেমটি খেলা যায়। যার কারণে গেমটির এক বিশেষ চাহিদা আছে।
৬। Fortnite গেমটির মতো আলাদা এক ধরনের বিনোদন পাওয়া যায়। Fortnite, যে গেমটি ২০২০ সালের পর থেকেই ছেলেদের জন্য বা ছোট বাচ্চাদের জন্য খেলার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।
এতে বাধ্যবাধকতা দিয়ে দেয়া হয় যে, ১৮ বছরের কম বয়সি কেউ গেমটি খেলতে পারবেনা। ফ্রি ফায়ার ১৮ বছর বয়সের কম ছেলে মেয়েরাও খেলতে পারে। এবং ফোর্টনাইটের মতো জনপ্রিয় গেমের মজাও এই গেমটিতে সবাই পায়।
অভিভাবক কিভাবে ফ্রী ফায়ারকে ছেলেমেয়েদের জন্য নিরাপদ করতে পারে?
এখন আমি যা বলব তা কেবলমাত্র অভিভাবকের জন্য প্রযোজ্য। যারা অভিভাবক আছেন ছেলে মেয়েদের বা সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত, তাদেরকে আমি বলি, কিছু স্টেপ অবলম্বন করতে পারেন। যাতে আপনার ছেলে মেয়ে যারা এখন ছোট বয়সে অথবা কিশোর বয়সের উপনীত হয়েছে, তারা নিরাপদ ভাবে ফ্রী ফায়ার খেলতে পারে।
যেহেতু ফ্রি ফায়ার গেমে স্থানীয় অভিভাবক নিয়ন্ত্রণ নীতি নেই। কাজেই ছেলেমেয়েদের খেলার ওপর বা স্ক্রিন টাইম এর উপর, স্ক্রিনে সময় ব্যয় করার উপর লিমিটেশন দিতে হবে।
আপনার ছেলে মেয়ে যে গেমই খেলুক না কেন, প্যারেন্টাল কন্ট্রোল অ্যাপ ব্যবহার করে তাদের স্ক্রিন টাইম বা খেলার সময় নির্ধারণ করতে হবে। দৈনিক সর্বোচ্চ দেড় ঘণ্টা গেম খেলা যাবে।
এটাও অনেক বেশি হয়ে যায়। কারণ একটি দিনে অনেক কাজকর্ম থাকে, এর বাইরে শুধুমাত্র বিনোদনের উদ্দেশ্যে দেড় ঘন্টা পার করতে গিয়ে তাও গেম খেলাটা উপযুক্ত না।
কারণ বিনোদনের জন্য আরো অনেক উপায় আছে। যেমনঃ বাইরে খেলাধুলা করা যেতে পারে। সেখানে দেড় ঘন্টা মোবাইলে বসে কাটিয়ে দেওয়াটা মোটেও ঠিক না।
আপনি সন্তানের জন্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্যারেন্টাল কন্ট্রোলার এপ ইউজ করতে পারেন। তার মধ্যে আছে Qustodio। ফ্রী ফায়ার খেললে কি ক্ষতি হয় জানুন।
তাছাড়া নিজের সন্তানের সাথে কথা বলতে পারেন, যে একটি গেমে কি কি ধরনের বিশৃঙ্খলা সে উপলব্ধি করতে পারে? একটি গেম কাউকে কি ধরনের অনুভূতি দেয়, সেটা জানাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি সন্তানের জন্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্যারেন্টাল কন্ট্রোলার এপ ইউজ করতে পারেন। তার মধ্যে আছে Qustodio। ফ্রী ফায়ার খেললে কি ক্ষতি হয় জানুন।
তাছাড়া নিজের সন্তানের সাথে কথা বলতে পারেন, যে একটি গেমে কি কি ধরনের বিশৃঙ্খলা সে উপলব্ধি করতে পারে? একটি গেম কাউকে কি ধরনের অনুভূতি দেয়, সেটা জানাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
পড়ুনঃ
যদি দেখুন কোন একটি গেম কারো স্বাভাবিক প্রবৃত্তিকে ক্ষুন্ন করে, তাহলে সে গেমটিকে ব্লক করে দিতে পারেন অথবা আনইন্সটল রাখতে পারেন।
তাছাড়া নিজের সন্তানকে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি যাওয়ার ব্যাপারে অ্যালার্ট রাখুন। এতে করে বড়সড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
যে সকল গেমে অনলাইন বা ইন্টারন্যাশনাল চ্যাটিং এর অপশন থাকে, গ্রুপ করে খেলার অপশন থাকে, সেখানে ভায়োলেন্সের পরিমাণ খুব বেশি থাকে।
এমনকি কোন অপরিচিত লোকের সাথে খেলার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যে কোন অপরিচিত কাউকে ফ্রেন্ড লিস্টে প্রবেশের অনুমতি দেয়া যেতে পারে না।
তাদেরকে বিভিন্ন সাইকোলজিকাল ফাঁদ বা পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেয়া দিতে পারেন। যেমনঃ যে কেউ অর্থাৎ যেকোনো কুজন বা খারাপ প্রভৃত্তির লোক কারো কাছ থেকে তথ্যাদি, টাকা, ছবি এসব কালেক্ট করার জন্য নানারকম ফাদ ফেলতে পারে।
সিমপেথি দেখিয়ে টাকা লুটে নিতে পারে। এ ধরনের আচরণ বা ব্যবহার সম্পর্কে ছেলে মেয়েদের অবগত রাখা উচিত।
তাছাড়া যে কাউকেই ফ্রী গেমসমূহের আসক্ত করার দিকটি সম্পর্কে জানতে হবে। বেশিরভাগ ফ্রী গেমে প্রোডাক্ট কে হয়? ইউজাররা। কারণ প্রিমিয়াম গেম গুলোতে আসক্ত হবার তেমন ব্যাপার থাকে না।
তাছাড়া যে কাউকেই ফ্রী গেমসমূহের আসক্ত করার দিকটি সম্পর্কে জানতে হবে। বেশিরভাগ ফ্রী গেমে প্রোডাক্ট কে হয়? ইউজাররা। কারণ প্রিমিয়াম গেম গুলোতে আসক্ত হবার তেমন ব্যাপার থাকে না।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলোতে সকল ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়। যাতে করে কেউ সকল দিক থেকে সচেতন হয়েই গেমটি খেলে।
অপরদিকে ফ্রি গেম গুলোতে যেহেতু প্রোডাক্ট হচ্ছে ইউজারা, কাজে ইউজারদের যত বেশি স্ক্রিন টাইম হবে তত বেশি আয় হবে।
সকল ইউজারদের কে গেমভ্লিং অ্যাপ, লোট বক্স অথবা গেমিং ক্রেডিট ক্রয় করতে হয় এমন সব গেম থেকে বিরত থাকতে হবে।
আমি এটা অভিভাবকের উদ্দেশ্যে বলছি। যদি আপনি একজন সতর্ক অভিভাবক হয়ে থাকেন, তাহলে আমি বলবো যেকোন গেম সন্তানের খেলার আগে আপনি নিজে খেলুন।
সকল ইউজারদের কে গেমভ্লিং অ্যাপ, লোট বক্স অথবা গেমিং ক্রেডিট ক্রয় করতে হয় এমন সব গেম থেকে বিরত থাকতে হবে।
আমি এটা অভিভাবকের উদ্দেশ্যে বলছি। যদি আপনি একজন সতর্ক অভিভাবক হয়ে থাকেন, তাহলে আমি বলবো যেকোন গেম সন্তানের খেলার আগে আপনি নিজে খেলুন।
চেষ্টা করে দেখুন যে, গেমটি কি রকম? গেমটি সম্পর্কে ধারণা নিজ থেকে নিন।
অত্যধিক পরিমাণে ফ্রী ফায়ার খেললে কি কি ক্ষতি হয়?
ফ্রী ফায়ার গেম খেললে কি ক্ষতি হয়?- হ্যা, ফায়ার গেমটিতে অনেক ক্ষতিকর দিক আছে। আমি ক্ষতিকর দিকগুলো এখানে উল্লেখ করছি।
১। চোখের মারাত্নক ক্ষতি হয়ঃ
বন্ধুরা, যারা যারা ফ্রি ফায়ার খেলছো তাদেরকে বলে দেই। বেশিক্ষণ পর্যন্ত স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে চোখের সমস্যা হয় এই জন্য না যে সেখান থেকে ব্লুরে রশ্মি নির্গত হচ্ছে।বরঞ্চ স্ক্রিন টাইম বা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে, বেশি মনোযোগ দিলে, স্বাভাবিক চোখের পলক ফেলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। এত করে চোখের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে।
eyesight ধীরে ধীরে সংকীর্ণ হয়ে আসবে। একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে, ফ্রী ফায়ার খেলে কিন্তু আইসাইড বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বেশি বা একাধারে ফ্রি ফায়ার খেলতেই থাকলে বা আসক্ত হয়ে গেলে আইসাইড সংকীর্ণ হয় বা হ্রাস পায়।
eyesight ধীরে ধীরে সংকীর্ণ হয়ে আসবে। একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে, ফ্রী ফায়ার খেলে কিন্তু আইসাইড বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বেশি বা একাধারে ফ্রি ফায়ার খেলতেই থাকলে বা আসক্ত হয়ে গেলে আইসাইড সংকীর্ণ হয় বা হ্রাস পায়।
২। দায়িত্বহীনতার অভাবঃ
ছোট ছেলে মেয়ে থেকে শুরু করে বড় ছেলেমেয়েরাও বা তরুনেররাও ফ্রী ফায়ার খেলে আসক্ত হয়ে যেতে পারে। এতে করে তাদেরকে স্বাভাবিক কোন কাজ করতে বললেও তারা না করার প্রবণতা দেখায়।এবং তাদেরকে গেম খেলাতে নিষেধ না করার জন্য, অথবা ডিস্টার্ব না করার জন্য নির্দেশ দেয়।
৩। সামাজিকতা হ্রাস পাওয়াঃ
বেশি বেশি গেম খেলার আরেকটি খারাপ দিক হলো এটি মানুষকে অসামাজিক করে তোলে। দেখা যায় যখন ফোনে কেউ কল দেয়, তখন খুব বেশি ভায়োলেন্স হয়ে যায়। অথবা ফোনটি কেটে দেয়। এতে করে মানুষে মানুষে মধ্যে দূরত্ব বেড়েও যেতে পারে।পড়ুনঃ
৪। অহেতুক টাকা পয়সা খরচঃ
ফ্রী ফায়ার গেমের আরেকটি ক্ষতিকর দিক হলো এখানে টাকা ইনভেস্ট করতে হয়। টাকার লোকশান হয়। কারণ এই সমস্ত গেম পরিশেষে কখনোই কাজে লাগে না। শুধু শুধু টাকা ইনভেস্ট হয়।৫। পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হয়ঃ
যদি আপনি একজন ছাত্র হন, যার পড়াশোনা হলো মূল কর্তব্য। তাহলে ফ্রী ফায়ারের মতো আসক্তিকর গেমগুলো আপনার জীবনকে বিপর্যস্ত করতে পারে।কারণ এতে করে দিনরাত শুধু একই গেম খেলবেন। পড়াশোনা বাজেয়াপ্ত হবে। পড়াশোনা থেকে মন উঠে যাবে। আরো ভালো ইনফরমেশন পেতেঃ
Is Garena Free Fire Addictive?
৬। বদ অভ্যাসে পরিণত হওয়া
এমন অসংখ্য ছেলে ছোট ছেলে মেয়ে আছে, যারা দিনরাত ফ্রী ফায়ার খেলে। এমনকি রাত পর্যন্ত জাগে এই গেম খেলার জন্য। অনেকে ডায়মন্ড ক্রয়ের জন্য বাবা- মায়ের কাছ থেকে টাকা চুরি করে।কেউ কেউ বাবা মায়ের বিকাশ, নগদ, রকেট একাউন্ট থেকে সুযোগ বুঝে টাকাও হাতিয়ে নেয়। পিতা মাতা বুঝতেও পারে না।
৭। ফ্রী ফায়ার খেলা শতভাগ হারামঃ
এবার ধর্মীয় দিক থেকে বলি, ফ্রী ফায়ার গেম খেলা ধর্মীয় দিক থেকে সম্পূর্ণ হারাম। এমনকি বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়াতে এ পর্যন্ত ব্যান করা হয়েছে।ফ্রি ফায়ার এর ক্ষতিকর দিকগুলোকে লক্ষ্য করলে দেখব, সরাসরি ভার্চুয়ালি খুন-খারাবি হয়। তাছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে এ গেমে যে সকল লুট আইটেম আনা হয়েছে, সবগুলোই হচ্ছে অশালীন। এবং ধর্মীয় বিপক্ষে চলে যায়।
ধর্মীয় দিক দিয়ে ফ্রী ফায়ার গেম খেলা হালাল নাকি হারাম? সেটা নিয়ে আগেই ব্লগ পোষ্ট পাবলিশ করেছি। তা জানতে নিজের ব্লগ পোস্টটি পড়ে নিতে পারেন।
ফ্রী ফায়ার খেলা কি হারাম নাকি হালাল?
ধর্মীয় দিক দিয়ে ফ্রী ফায়ার গেম খেলা হালাল নাকি হারাম? সেটা নিয়ে আগেই ব্লগ পোষ্ট পাবলিশ করেছি। তা জানতে নিজের ব্লগ পোস্টটি পড়ে নিতে পারেন।
ফ্রী ফায়ার খেলা কি হারাম নাকি হালাল?
শেষকথাঃ
আজকের ব্লগ পোস্টে ফ্রি ফায়ার গেম এর ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানলাম। ফ্রি ফায়ার গেম খেললে কি ক্ষতি হয়, তা আগে থেকে জেনে নিয়ে সচেতন থাকুন।যাতে করে কোনো ভুল পদক্ষেপ না নিতে পারে। আশাকরি, এই পোস্টটি কাজে এসেছে। ভালো লাগলে শেয়ার করুন। আর পাশেই থাকুন। সবাইকে ধন্যবাদ। খোদা হাফেজ।
আরও পড়ুনঃ